চট্টগ্রাম নগরে দুর্গাপূজার একটি মণ্ডপে অনুষ্ঠানের মঞ্চে বৃহস্পতিবার ইসলামি সংগীত পরিবেশন করেছেন একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা।
এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম রাতেই ওই পূজামণ্ডপে গিয়ে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছেন।ঘটনাটি ঘটেছে নগরের রহমতগঞ্জের জে এম সেন হলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের ছয় সদস্য অনুষ্ঠানে দুটি গান পরিবেশন করেন। তার মধ্যে একটি গান ছিল ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম’।
সংগঠনটি জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের অন্যতম নেতা অ্যাডভোকেট নিখিল কুমার দাশ বলেন, শতশত পূজার্থীদের সামনে ধর্মীয় সংগীত পরিবেশন করায় ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তবে একটি সংগঠনের ব্যানারে সংগীতটি পরিবেশন করলেও তাদের চিহ্নিত করা যায়নি। আমরা আরও খোঁজ নিচ্ছি।চট্টগ্রামের পূজা মণ্ডপে ইসলামিক সংগীত পরিবেশনের অভিযোগে চট্টগ্রাম কালচারাল এ্যাকাডেমির কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইসলামিক সংগীত পরিবেশনের সুযোগ দেওয়ায় সজল দত্তকে পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের জানান, ঘটনার পর পরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
এদিকে রাত পৌনে ১২টা ফের উত্তপ্ত হয়ে পড়ে জেমসন হল। বাকবিণ্ডা ও হাতাহাতিতে জড়ায় কিছু যুবক। সেখান থেকে এক আনসার সদস্যকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়েছে বলে জানান নগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা।তিনি জানান, ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে অসংলগ্ন কথা বলায় তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে যান পূজার্থীরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাকে আটক করা হয়েছে।এদিকে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এরপর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, চট্টগ্রাম নগর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ, সেনাবাহিনীসহ অনেকে। বিষয়টি নিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই মতবিনিময় করেন তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানানো হয়।পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসন বাদী হয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।