রাষ্ট্রীয় সফরে বর্তমানে কানাডায় আছেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সেখানে তিনি কানাডার প্রতিরক্ষা বিভাগের উপ-সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল স্টিফেন আর কেলসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাতে তারা দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন দিগন্ত অনুসন্ধানের ওপর জোর দিয়েছেন। এছাড়া কানাড-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের ভাইস চেয়ার এবং সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য সালমা জাহিদ এমপির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন সেনাপ্রধান। যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে বুধবার অটোয়ায় পৌঁছেছেন ওয়াকার-উজ-জামান। কানাডার প্রিভি কাউন্সিল অফিসের পরিচালক অজিত সিং এবং কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাহিদা সোবহান তাকে স্বাগত জানান। এ খবর দিয়েছে ঢাকা ট্রিবিউন।এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে রাষ্ট্রীয় সফরে কানাডায় পৌঁছে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান কানাডার প্রতিরক্ষা বিভাগের উপপ্রধান জনারেল স্টিফেন আর কেলসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাতকালে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। বাংলাদেশের হাইকমিশন জানিয়েছে, বাংলাদেশের সেনাপ্রধান এবং অটোয়ার প্রতিরক্ষা বিভাগের মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের বিষয়ে আলাপ হয়েছে।
বুধবার সকালে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বৈঠক করেন সালমা জাহিদ। ওই বৈঠকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্টুডেন্ট ভিসা সহজীকরণ এবং ত্বরান্বিত করার ওপর গুরুত্ব দেন জেনারেল ওয়াকার। সেইসঙ্গে কানাডায় কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের ভিসার বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি। জেনারেল ওয়াকার যুব উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকারের বিষয়টি তুলে ধরেন। এছাড়া দুই দেশের পারস্পরিক সুবিধার কথা উল্লেখ করে কানাডায় আরও বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রদানের বিষয়ে অটোয়ার সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের হাইকমিশনার। তবে কানাডায় বিদ্যমান আবাসন ঘাটতির কথা জানিয়ে অধিক ভিসা প্রদানে কিছুটা চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সালমা জাহিদ। তিনি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দ্রুত ভিসা প্রক্রিয়াকরণের জন্য কানাডার মনোনীত প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে উৎসাহিত করেন এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির বর্তমান সীমাবদ্ধতাগুলো মোকাবেলায় সমাধান খোঁজার প্রতি তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।ওই বৈঠকে শিক্ষা খাতে বিনিময় কর্মসূচিতে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং কানাডিয়ান ও বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়েও আলোচনা হয়। এ ছাড়া তারা কৃষি ও অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেন। জেনারেল ওয়াকার কানাডার আবাসন সংকট মোকাবেলায় সহযোগিতার প্রস্তাব করেছিলেন। এছাড়াও স্বাস্থ্য খাতে কানাডাকে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করেন সেনাপ্রধান।লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেলসির সঙ্গে পৃথক বৈঠকে, জেনারেল ওয়াকার চাকরিরত এবং অবসরপ্রাপ্ত বাংলাদেশি সামরিক কর্মকর্তাদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার পরামর্শ দেন। তিনি ভিসার ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট কাঠামোর প্রস্তাব করেন এবং এর প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। পৃথক ক্ষেত্রে ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণে কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে তা দ্বিপাক্ষিক পরামর্শের মাধ্যমে সমাধানের পথ খোঁজার প্রস্তাব করেন জেনারেল ওয়াকার। এছাড়া উভয় দেশের সামরিক কর্মীদের পেশাগত উন্নয়ন জোরদার করতে ডিফেন্স কলেজ এবং স্টাফ কলেজগুলোতে অফিসার বিনিময়ের মাধ্যমে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন সেনাপ্রধান। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম আসাদুল হক এবং মেজর মো. শোয়েব রিফাত অউমির সাথে উভয় বৈঠকে অংশ নেন কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাহিদা সোবহান।