Title :
২১ দিনে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পেয়েছে বাংলাদেশ শেখ হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচার কাণ্ডের অনুসন্ধান শুরু তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে সংগীত শিল্পী রাহাত ফাতেহ আলীর সাক্ষাৎ আজ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত হবেন উপদেষ্টা হাসান আরিফ বাংলাদেশের গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন বাংলাদেশ ইকোনমিস্ট’র ‘কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার ২০২৪’ নির্বাচিত শনিবার ঢাকায় রাহাত ফতেহ আলীর কনসার্ট : টোল ফ্রি এক্সপ্রেসওয়ে একাত্তরের অমীমাংসিত সমস্যা মীমাংসা করুন : পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মৃত্যুপথযাত্রী রোগীকে বাঁচাতে খেলনা পিস্তল নিয়ে ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টাঃ এসপি ক্যান্সারের টিকা তৈরি রাশিয়ার, শিগগিরিই বিনামূল্যে বিতরণ

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল করবেন ট্রাম্প, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের মাথায় হাত!

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৩ Time View

প্রথম কার্যদিবসে অন্তত দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। প্রথম দিনই যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার যে ধারাবাহিকতা চালু আছে তা স্থগিত করবেন তিনি। পিতামাতা বা আত্মীয়দের সঙ্গে যেসব শিশুকে যুক্তরাষ্ট্রে নেয়া হয়েছে, ট্রাম্প বা তার দলের চোখে তারা অবৈধ অভিবাসী। এ বিষয়ে তিনি ডেমোক্রেটদের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় অবৈধ অভিবাসী বিতাড়ন ছিল তার অন্যতম ইস্যু।

আগামী ২০ শে জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। এদিনেই তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন। এছাড়া ২০২০ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর ২০২১ সালের ৬ই জানুয়ারি তার উস্কানিতে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গা হয়। সেই দাঙ্গায় কমপক্ষে ৫ জন নিহত হন। দাঙ্গার সময় ক্যাপিটল হিলের ভিতরে অবস্থান করছিলেন তখনকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স, প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি সহ বিপুল সংখ্যক কংগ্রেসম্যান। কিন্তু ট্রাম্পের উস্কানিতে সেখানে দাঙ্গা চালায় তার সমর্থকরা। এ ঘটনায় বেশ কিছু সমর্থককে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেয়া হয়েছে। কিন্তু ট্রাম্প আবার ক্ষমতায় ফিরছেন। এ সময়ে তিনি দায়িত্ব নেয়ার দিনেই ওই ঘটনায় শাস্তি ভোগ করছেন এমন ব্যক্তিদের সাধারণ ক্ষমা করে দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন টাম্প। 

গত ৫ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমবার কোনো টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি বলছে, ট্রাম্প এনবিসি টেলিভিশনের মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে ওই সাক্ষাৎকার দেন। শুক্রবার রেকর্ডকৃত এই সাক্ষাৎকারে তিনি বিস্তৃত বিষয়ে আলোচনা করেন।

জানান, ২০শে জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর অভিবাসন, জ্বালানি এবং অর্থনীতিসহ বেশ কিছু ইস্যুতে নির্বাহী আদেশ দেবেন। ট্রাম্প আরো জানান, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে কোনো বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করবেন না তিনি। বলেন, ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গা নিয়ে আইনপ্রণেতাসহ তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কিছু মানুষ তদন্ত করেছে। ওইসব মানুষকে জেলে পাঠানো উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। ওই সাক্ষাৎকারে প্রশ্নকর্তা তার কাছে জানতে চান- ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় শত শত মানুষ অভিযুক্ত। এসব ব্যক্তিকে তিনি সাধারণ ক্ষমা দেবেন কিনা। জবাবে ট্রাম্প বলেন, আমরা প্রতিটি মামলাই দেখব এবং এ বিষয়ে খুব দ্রুতই পদক্ষেপ নেব। দাঙ্গা করা এসব ব্যক্তির ব্যাপারে কথা বলার সময় ট্রাম্প আরো বলেন, আপনারা ইতিমধ্যেই জানেন ওইসব ব্যক্তি কয়েক বছর ধরে জঘন্য-নোংরা পরিস্থিতির মধ্যে আছে। রোববার প্রচার করা ওই সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করেন। ন্যাটোতে যুক্তরাষ্ট্র থাকবে কিনা তা নিয়েও তিনি কথা বলেন।

ট্রাম্প বলেন, যদি ন্যাটোর অন্য সদস্যরা যথাযথ অনুদান দেয়, যদি মনে হয় তারা ন্যায্যতা বজায় রাখছে এবং যদি তারা আমাদেরকে (যুক্তরাষ্ট্র) যথাযথ মূল্যায়ন করছে- তাহলে অবশ্যই ন্যাটোর সাথে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প বলেন, তিনি গর্ভপাত বিষয়ক পিলের উপর কোনো বিধিনিষেধ দেবেন না। এ বিষয়ে মুচলেকা দেওয়ার কথা বলা হলে তিনি বলেন, দেখুন আমি অঙ্গীকার করছি। কিন্তু পরিস্থিতির তো পরিবর্তনও হয়। রিপাবলিকান এই নেতা জানান, তিনি হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন করার পর ইউক্রেনের উচিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার প্রত্যাশা কম রাখা। ট্রাম্প মনে করেন অটিজম এবং শিশুদের টীকার মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কিনা তা যাচাই করা উচিত- এ ধারণাটি বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণায় বাদ পড়ে গেছে। ট্রাম্প তার স¦াস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে ভ্যাকসিন বিদ্বেষী রবার্র্ট এফ কেনেডি জুনিয়রকে মনোনীত করেন এবং তিনি এই ব্যাপারটি পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানান। সোশ্যাল সিকিউরিটির ব্যাপারে কথা বলতে যেয়ে ট্রাম্প জানান পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তার এটি বাদ দেওয়ার কোনো চিন্তা নেই। এর মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাপারেও তিনি কোনো মতামত দেননি। কিন্তু সোশ্যাল সিকিউরিটি আরো কার্যকর করার আশ্বাস দেন। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক অংশীদার এমন দেশ থেকে আনা পণ্যের উপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপ করলে আমেরিকানদের জন্য নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাবে কী না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান- আমি কোনো কিছুর নিশ্চয়তা দিতে পারি না। আমি শুধু আগামীকাল কী হবে তার নিশ্চয়তা দিতে পারি। অভিবাসন সমস্যার ব্যাপারে কথা বলতে যেয়ে ট্রাম্প এনবিসিকে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর মাধ্যমে চালু হওয়া জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার আইনটি আমাদের সংস্কার করতে হবে।ট্রাম্প আরো জানান, তিনি তার নির্বাচনী প্রচারণার মাধ্যমে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হয়েছেন এমন অনথিভুক্ত (আনডকুমেন্টেড) অভিবাসীদেরকে তাদের পরিবারসহ দেশ থেকে বের করে দেয়ার ব্যবস্থা নেবেন। ট্রাম্প জানান- দেখুন আমি পরিবার ভাঙতে চাই না। পরিবার বাঁচানোর একটি পথই খোলা আছে। তা হলো পুরো পরিবারসহ এসব অধিবাসীদের তাদের নিজের দেশে ফেরত পাঠানো।

ট্রাম্প আরো বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ‘ডিফারড এ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড’ কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। এই আইনের মাধ্যমে যেসব পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল, তাদেরকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করবেন তিনি। পরে তাদেরকে দেশ থেকে বের করে দেয়ার জন্য কংগ্রেসের সাথে কাজ করতে চান।

তিনি বলেন, আমি ডেমোক্রেটদের সাথে একটি পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে চাই। কিছু অবৈধ অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে ভালো চাকরি পেয়েছেন, অনেকে ব্যবসাও শুরু করেছেন। ট্রাম্পকে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়া সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা যায়। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ সপ্তাহে তার বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত ছেলে হান্টার বাইডেনকে ঢালাওভাবে ক্ষমা করেছেন। আগামী মাসে ক্ষমতা ছাড়ার পূর্বে প্রেসিডেন্ট বাইডেন আরো কয়েকজন রাজনৈতিক মিত্রকে একইভাবে ক্ষমা করেছেন।

ট্রাম্পের বক্তব্য শুনে বোঝা যায়, তিনি বাইডেনের বিরুদ্ধে কোনো বিশেষ তদন্ত করবেন না। এর আগে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ট্রাম্প বলেন, আমি অতীতে যেতে চাই না। আমার দেশকে সমৃদ্ধ করতে চাই। সাফল্যের মাধ্যমেই প্রতিশোধ নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় আছে ডেমোক্রেট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ। এর যেসব সদস্য তার বিরুদ্ধে তদন্ত করেছেন তাদেরকে জেলে পাঠানো উচিত। ট্রাম্পের এ বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন সাবেক রিপাবলিকান কংগ্রেসওমেন লিজ চেনি।

এনবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে ট্রাম্প জানান, তিনি এফবিআই-এর হাতে তার শত্রুদের বিরুদ্ধে তদন্তের দায়িত্ব দেবেন না। কিন্তু তারা যদি অন্যায় করে থাকে, আইনভঙ্গ করে থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, কোনো দোষ না করা সত্ত্বেও আপনারা জানেন তারা (ডেমোক্রেট) আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিল।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © প্রভাতের পত্র
Customized BY NewsTheme